হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়া লিমিটেড (Hyundai) তাদের সবুজ গতিশীলতার সমাধান প্রসারিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এখন এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও লাইনআপে একটি নতুন ‘ইএক্স’ ভ্যারিয়েন্ট চালু করেছে। এই নতুন হুন্ডাই এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও গ্রাহকদের জন্য একটি সাশ্রয়ী এবং দক্ষ বাই-ফুয়েল (পেট্রোল ও সিএনজি) বিকল্প হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটির এক্স-শোরুম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭,৫০,৭০০ টাকা।
এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রবর্তনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়া লিমিটেডের পূর্ণকালীন ডিরেক্টর এবং প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শ্রী তরুণ গর্গ বলেন, “এইচএমআইএলে আমরা আমাদের গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে স্মার্ট গতিশীলতার সমাধান প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হুন্ডাই এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও লাইনআপে ‘ইএক্স’ ভ্যারিয়েন্টের প্রবর্তন আমাদের গ্রাহককেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রমাণ। এটি নিশ্চিত করে যে স্মার্ট গতিশীলতা আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যায়। এর দক্ষ বাই-ফুয়েল প্রযুক্তি, উন্নত নিরাপত্তা ফিচার এবং হুন্ডাইয়ের স্বাক্ষরিত নির্ভরযোগ্যতার সঙ্গে, এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও ইএক্স ভ্যারিয়েন্ট সাশ্রয়ী মূল্য এবং দক্ষতার একটি সর্বোত্তম সমন্বয় প্রদান করে। আমরা আমাদের সবুজ গতিশীলতার পোর্টফোলিও প্রসারিত করতে থাকব এবং গ্রাহকদের জন্য উদ্ভাবনী ও মূল্যভিত্তিক সমাধান প্রদানে নিবেদিত থাকব।”
নতুন প্রযুক্তি ও ফিচার্স
হুন্ডাই এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও নতুন প্রযুক্তি এবং উন্নত নিরাপত্তা ফিচার্সের সঙ্গে এসেছে। এর ডুয়াল-সিলিন্ডার সেটআপ বুটে আরও জায়গা প্রদান করে, যা যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত লাগেজ স্পেস নিশ্চিত করে এবং পারফরম্যান্সে কোনো আপস না করে। এই গাড়ির ইএক্স ভ্যারিয়েন্টে রয়েছে ৬টি এয়ারব্যাগ স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে, ৪.২ ইঞ্চি রঙিন টিএফটি এমআইডি সহ ডিজিটাল ক্লাস্টার, স্বাক্ষরিত এইচ-এলইডি টেল ল্যাম্প, ড্রাইভারের সিটের উচ্চতা সমন্বয়, কীলেস এন্ট্রি এবং আরও অনেক কিছু। এই ফিচারগুলো গাড়িটিকে শুধু নিরাপদই নয়, ব্যবহারে আরামদায়ক এবং আধুনিক করে তুলেছে।
ইঞ্জিন ও পারফরম্যান্স
হুন্ডাই এক্সটার ইএক্স-এর হুডের নিচে রয়েছে ১.২ লিটারের বাই-ফুয়েল কappa পেট্রোল ইঞ্জিন, যা হাই-সিএনজি ডুও ইউনিটের সঙ্গে যুক্ত। এই ইঞ্জিনটি সর্বোচ্চ ৮২ হর্সপাওয়ার শক্তি এবং ১১৩ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করতে সক্ষম। সিএনজি মোডে এটি ৬৮ বিএইচপি এবং ৯৫.২ এনএম টর্ক প্রদান করে, যা ৫-স্পিড ম্যানুয়াল গিয়ারবক্সের সঙ্গে যুক্ত। হুন্ডাই দাবি করেছে যে এই গাড়ি সিএনজি মোডে ২৭.১ কিমি/কেজি ফুয়েল এফিসিয়েন্সি দিতে পারে, যা এটিকে দীর্ঘ পথযাত্রার জন্য একটি আদর্শ বিকল্প করে তোলে।
বাজারে প্রতিযোগিতা ও দাম
হুন্ডাই এক্সটার-এর দাম শুরু হয় ৬.২০ লক্ষ টাকা থেকে (এক্স-শোরুম)। নতুন ইএক্স ভ্যারিয়েন্টটি ৭,৫০,৭০০ টাকায় এসে এটিকে আরও সাশ্রয়ী করে তুলেছে। এই গাড়িটি ভারতীয় বাজারে নিসান ম্যাগনাইট, টাটা পাঞ্চ, মারুতি সুজুকি ফ্রঙ্কস এবং অন্যান্য গাড়ির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। সিএনজি বিকল্পের সঙ্গে এটি এমন গ্রাহকদের আকর্ষণ করতে পারে যাঁরা জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব গাড়ির খোঁজে রয়েছেন।
গ্রাহকদের জন্য সুবিধা
এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও-র ডুয়াল-সিলিন্ডার প্রযুক্তি বুট স্পেস বাড়িয়ে দেয়, যা একক সিলিন্ডার সিএনজি গাড়ির তুলনায় অনেক বেশি সুবিধাজনক। এটি গ্রাহকদের পেট্রোল ও সিএনজি—দুটি জ্বালানি বিকল্পের সুবিধা দেয়। শহরের ভিড়ের মধ্যে বা দীর্ঘ যাত্রায় এই গাড়ি একটি ব্যবহারিক এবং লাভজনক সমাধান হিসেবে কাজ করতে পারে। ৬টি এয়ারব্যাগ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ফিচার্স এটিকে পরিবারের জন্যও নিরাপদ করে তুলেছে।
ভারতীয় বাজারে প্রভাব
ভারতে সিএনজি গাড়ির চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। জ্বালানি খরচ কমানো এবং পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্য অনেকেই সিএনজি গাড়ির দিকে ঝুঁকছেন। হুন্ডাইয়ের এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট সেই চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। টাটা পাঞ্চ আইসিএনজি-র মতো প্রতিযোগীদের সঙ্গে তুলনা করলে, হুন্ডাই এক্সটার তার ফিচার্স এবং দামের ভারসাম্যের কারণে আলাদা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হুন্ডাই এক্সটার হাই-সিএনজি ডুও-র নতুন ইএক্স ভ্যারিয়েন্ট ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং দক্ষ গাড়ির বিকল্প হয়ে উঠেছে। এটি হুন্ডাইয়ের সবুজ গতিশীলতার প্রতিশ্রুতি এবং গ্রাহককেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির একটি উদাহরণ। আগামী দিনে এই গাড়ি বাজারে কীভাবে সাড়া ফেলে, সেদিকে নজর থাকবে সকলের।